সরকারি উৎসাহে পেঁয়াজের আবাদ বেড়েছে। মাঠ থেকে উঠতে শুরু করেছে নতুন পেঁয়াজ। তবে আমদানিও হচ্ছে বিপুল পরিমাণে। এতে উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রত্যাশিত মূল্য পাচ্ছেন না দেশের চাষীরা। ভরা মৌসুমে আমদানি বন্ধের দাবি তাদের।
দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা কমপক্ষে ২৫ লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয় প্রায় সাড়ে ৩৬ লাখ টন। এর অন্তত ২৫ ভাগ নষ্ট হয়। তাই ভারত, মিয়ানমারসহ কয়েক দেশ থেকে আমদানি করা হয় পেঁয়াজ। সাধারণত দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম যখন অস্বাভাবিক বাড়ে, তখন ভোক্তাদের স্বস্তি দিতে আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। গত কয়েক বছর এমন নীতিই ছিল সরকারের। কিন্তু এবার ভরা মৌসুমেও আমদানি হচ্ছে পেঁয়াজ। এতে বাজার পড়ে যাওয়ায় প্রত্যাশিত মূল্য পাচ্ছেন না দেশের চাষীরা। এমন পরিস্থিতিতে লোকসান এড়াতে ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখার দাবি কৃষকদের। কৃষকরা জানান, ফলন পেয়ে কি হবে?এলসি পেঁয়াজে মোকাম ভর্তি, ফলন ভালো হলেও দাম পাচ্ছি না। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমরা। ব্যবসায়ীরা জানান, এবার ফলন ভালো হয়েছে কিন্তু দাম পাচ্ছে না। এজন্য গৃহস্থরা জানান আরেকটু দাম বেশি হলে খরচনা উঠবে। স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিনই দেশে ঢুকছে আমদানি-পেঁয়াজের চালান। বন্দরে ইন্দোর ও নাসিক জাতের নতুন পেঁয়াজ ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা, আর পুরানো পেঁয়াজ ২১ থেকে ২২ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মোকাম ব্যবসায়ীরা বলেন, “আমাদের কৃষকরা লাভবান হতে পাবেন তার জন্য আমদানি সীমিত করা উচিত। ভারত থেকে এলসি পেঁয়াজ আমদানি হওয়ার কারণে দেশি নতুন পেঁয়াজের দাম চাষীরা তুলনামূলক কম পাচ্ছেন।” হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, “ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত আছে হিলি স্থলবন্দরে। তবে আমদানি পূর্বের থেকে অনেক কম। সর্বনিম্ন পর্যায়ে কমে গেছে।” অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কৃষকরা উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পেলে উৎপাদনে নিরুৎসাহিত হতে পারেন। তাই ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানি না করার পরামর্শ তাদের। কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, “বিশেষ করে জানুয়ারি থেকে মার্চ-এপ্রিল এই কয়টা মাস আমদানি বন্ধ রাখা উচিত। যাতে করে কৃষকরা পেঁয়াজের ন্যায্য দাম পায়।” দেশে বিঘাপ্রতি পেঁয়াজ চাষে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। পচনশীল হওয়ায় সব পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা সম্ভব হয় না।