মোঃ মজিবর রহমান শেখঃ
ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে ১৪টি মন্দিরের প্রতিমাগুলো ভাংচুর করেছে দূর্বৃত্তরা। ৫ ফেব্রুয়ারী রবিবার ভোর রাতের কোন এক সময় এ ঘটনা ঘটেছে। বালিয়াডাঙ্গী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি খায়রুল আনাম বলেন, ৫ ফেব্রুয়ারি রবিবার ভোর রাতের কোন এক সময় বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা, চাড়োল ও পাড়িয়া ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, ভাংচুর করা প্রতিমাগুলো দেখতে অনেক মানুষজন ভিড় করছে। বর্তমানে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিদ্যা নাথ বর্মন বলেন, ৫ ফেব্রুয়ারি রবিবার ভোর রাতে কে বা কাহারা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নে ৯টি, চাড়োল ইউনিয়নে ১টি ও পাড়িয়া ইউনিয়নে ৪টি মন্দিরের প্রতিমাগুলো ভাংচুর করেছে। এর মধ্যে ধনতলা ইউনিয়নের সিন্দুরপিন্ডি থেকে টাকাহারা একটি হরিবাসর মন্দির, একটি কৃষ্ণঠাকুর মন্দির, ৫ টি মনসা মন্দির,একটি লক্ষ্মীমন্দির, একটি কালি মন্দিরের প্রতিমাগুলো ভাংচুর করা হয়েছে।
এছাড়াও চাড়োল ইউনিয়নে একটি কালী মন্দির ও পাড়িয়া ইউনিয়নে একটি বুড়া-বুড়ি মন্দির, একটি লক্ষ্মী মন্দির, একটি আমাতি মন্দির ও একটি মাসানমাঠ মন্দিরের প্রতিমাগুলো ভাংচুর করা হয়েছে।
বিদ্যা নাথ বর্মন আরও বলেন, দূর্বৃত্তরা প্রতিমাগুলোর হাত-পা, মাথা ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ করে ফেলেছে। আবার কিছু প্রতিমা ভেঙে পুকুরের পানিতে ফেলে রেখেছে। আমরা চাই প্রশাসন ঘটনাটি সঠিক ভাবে তদন্ত করুক। সেইসাথে প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করা হোক।
ধনতলা ইউনিয়নের পূজা উর্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক জোতিন্দ্র নাথ বলেন, হঠাৎ করে কে বা কাহারা রাতের আঁধারে প্রতিমাগুলো ভাংচুর করেছে। এতে আমরা আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় আছি। যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করা হোক। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আসলাম জুয়েল বলেন, যে সব মন্দিরগুলোর প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে এগুলো মন্দির অনিরাপদহীন ভাবে রাস্তার পাশে ছিল। প্রতিমা ভাংচুরের এই ঘটনাটি আসলে দুঃখজনক। এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবে বলে আশা করি। এছাড়াও সকলকে সজাগ থাকতে হবে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান, ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন সহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আমার কাছে মনে হয়েছে ঘটনাটি উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। বাংলাদেশে বর্তমান শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যই পরিকল্পিত ভাবে এ ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। এ ঘটনাটি কে করেছে বা কারা করেছে; এ জন্য আমরা অবশ্যই মামলা নেবো সেই সাথে অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলাম। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। সেইসাথে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য সচেতনতা মূলক কাজ করা করা হবে।