মোঃ মজিবর রহমান শেখঃ
ঠাকুরগাঁওয়ে পিতাকে মুক্তিযোদ্ধা করার স্বীকৃতির দাবিতে বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরছেন প্রতিবন্ধী সন্তান নজরুল ইসলাম (৫২)। ইতিমধ্যে তিনি ঠাকুরগাঁওয়ের বেশ কয়েকজন বীর মুক্তিযেদ্ধা ও বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে বিষয়টি জানিয়ে এ দাবি জানান। তার মতে তার পিতা মো: আব্দুল মালেক যুদ্ধকালীন সময়ে ঠাকুরগাঁও ভোকেশনার ট্রেনিং ইন্সটিটিউটে এম,এল,এস,এস পদে কর্মরত ছিলেন। ওই সময়ে তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন মর্মে বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ জানতে পারেন। যুদ্ধের পর তিনি আর ফেরত আসেননি বলে জানা যায়। পিতাকে মুক্তিযোদ্ধা দাবিকারী নজরুল ইসলামের খালা হাসিনা বেগম বলেন, আমার দুলাভাই মো: আব্দুল মালেক ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের ঘোষপাড়া মহল্লার স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন। তার একমাত্র ছেলে নজরুল ইসলাম একজন প্রতিবন্ধী; আমাদের বাড়িতেই থাকে। দুলাভাই ১৯৬৮ সালের ১ অক্টোবর ঠাকুরগাঁও ভোকেশনার ট্রেনিং ইন্সটিটিউট (টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে) চাতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে ওই প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ জানতে পারেন তিনি যুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলেন। পরবর্তিতে তিনি যুদ্ধ থেকে ওই প্রতিষ্ঠানে আর ফেরত আসেননি। আমরা দীর্ঘদিন উনার কোন খোজ না পেয়ে ২০২০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁও টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে গেলে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রকৌশলী মো: বজলুর রহমান আমাদের একটি প্রত্যায়ন পত্র প্রদান করেন। যেখানে তিনি উল্লেখ করেন, তারা বিভিন্ন তথ্য সূত্র থেকে জানতে পারেন মো: আব্দুল মালেক স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলেন এবং শহীদ হয়েছিলেন। পিতাকে মুক্তিযোদ্ধা দাবিকারী সন্তান নজরুল ইসলাম (৫২) বলেন, আমাদের বাসা আগে পৌর শহরের ঘোষপাড়ায় ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেখানে থাকি না। বর্তমানে আমি খালার বাসা সালন্দর ইউনিয়নের জামুরীপাড়ায় থাকি। সেখানে মানুষের বাসা বাড়িতে ও মাঠে দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে কাজ করি। সামান্য কিছু টাকা পেলেও চলতে পারি না; বিয়ে করলেও আর্থিক অনটনের কারনে সংসার টিকেনি। আমরা অনেক মানুষের কাছে জেনেছি আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করে শহীদ হয়েছেন। আমরা বাবার মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি চাই।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁওয়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, নজরুল ইসলামগণ অনেক বিলম্ব করে ফেলেছেন। কিছুদিন পূর্বে উনাদের হাতে সুযোগ ছিল। তবে যেহেতু উনাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কোন কাগজপত্র নেই সেহেতু আমাদের তেমন কিছু করার নেই। উনারা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও প্রয়োজনীয় সাক্ষী সহ যোগাযোগ করতে পারেন।