নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
র্যাব-১০ এর গোয়ান্দা দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ডিবি পরিচয় প্রদান করে একটি প্রতারক চক্র বেশ কিছুদিন যাবৎ অর্থ-বিত্তশালী বিভিন্ন ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলে তাদের নিকট হতে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। উক্ত সংবাদ পেয়ে র্যাব ১০ একটি আভিযানিক দল জড়িতদের গ্রেফতারের লক্ষে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১০ উক্ত আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় উক্ত প্রতারক চক্রের কতিপয় সদস্য অবস্থান করছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল ২৭ মার্চ ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ রাতে উক্ত আভিযানিক দল রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানাধীন দনিয়া এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে ডিবি পরিচয় প্রদান করে প্রতারণাকারী চক্রের ০৩ ভুয়া ডিবি পুলিশকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের নাম ১। মোঃ তরিকুল ইসলাম (৪৮), ২। মোঃ মতিউল ইসলাম (৪০) ও ৩। হাবিবুল্লাহ (৩৮) বলে জানা যায়। এসময় তাদের নিকট থেকে ০২টি খেলনা পিস্তল, ০২টি ভুয়া ডিবি পুলিশের জ্যাকেট, ০২টি ওয়াকিটকি সেট, ০২ জোড়া হ্যান্ডক্যাপ, ০১টি চোরাই মোটরসাইকেল, ০১টি ক্যামেরা, ০১টি ভুয়া পুলিশ আইডি কার্ড, ০৫টি ভুয়া সাংবাদিক আইডি কার্ড, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা উক্ত প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে, গ্রেফতারকতৃ ব্যক্তিরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। তারা প্রথমে ঢাকা শহরে তাদের সুবিধাজনক এলাকায় ফ্লাট বাসা ভাড়া করে। পরবর্তীতে তাদের দলের মেয়ে সদস্যরা রাজধানীর যাত্রাবাড়ীসহ আশপাশের এলাকায় অর্থ-বিত্তশালী বিভিন্ন ব্যক্তিদের অনৈতিক কাজের লোভ দেখিয়ে তাদের পরিকল্পিত স্থানে নিয়ে যায়। ভিকটিমদের সেখানে নেওয়ার পর তাদের দলের মেয়ে সদস্যরা কৌশলে তাদের দলনেতা তরিকুল ইসলাম’কে সংবাদ দেয়। সংবাদ পেয়ে তরিকুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা ডিবি পুলিশের জ্যাকেট পরিধান করে খেলনা পিস্তল, ওয়াকিটকি সেট, হ্যান্ড ক্যাপ ও ক্যামেরাসহ উক্ত স্থানে গিয়ে কৌশলে মেয়ে সদস্যদের সাথে ভিকটিমদের আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে। ভিডিও ধারনের পর তারা ভিকটিমদের ধারণকৃত ভিডিও দেখিয়ে গ্রেফতার, মামলাসহ বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মোটা অংকের টাকা দাবি করত বলে জানা যায়।গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ তরিকুল ইসলাম উক্ত প্রতারক চক্রর দলনেতা। তার পরিকল্পনা মতে তার দলের মেয়েরা অর্থ-বিত্তশালী বিভিন্ন ব্যক্তিদের অনৈতিক কাজের লোভ দেখিয়ে তাদের পরিকল্পিত স্থানে নিয়ে যেত বলে জানা যায়।গ্রেফতারকৃত আসামী হাবিবুল্লাহ তরিকুল এর অন্যতম সহযোগী। সে বিভিন্ন এলাকা হতে এসকল অনৈতিক কাজ করার জন্য মেয়েদের সংগ্রহ করত। সে তার দলনেতার আদেশে মেয়ে সদস্যদের মাধ্যমে নিয়ে আসা অর্থ-বিত্তশালী বিভিন্ন ব্যক্তিদের গোপনে ক্যামেরা দিয়ে মেয়েদের সাথে ভিকটিমের আপত্তিকর ভিডিও ধরণ করত। পরবর্তীতে তরিকুলের সহযোগী হয়ে ভিকটিমদের বিভিন্ন ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিত। এছাড়া তার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ মতিউল ইসলাম তরিকুল এর সহযোগী। সে উক্ত স্থানে সাংবাদিক পরিচয়ে হাজির হত। পরবর্তীতে সে উক্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশের ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিত বলে জানা যায়।গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।