মোঃ মশিউর রহমান বিপুল
কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার পাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পাঙ্গা রাণী লক্ষ্মীপ্রিয়া স্কুল এন্ড কলেজের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি করে কাঁঠাল গাছের চারা এবং একটি করে পরিবেশ বান্ধব কাগজের তৈরি কলম বিতরণ করা হয়েছে।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজারহাট উপজেলার দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থীর মাঝে পরিবেশ বাদী সংগঠন গ্রিন ইকো, রিনিউ নাও এবং গ্লোবাল সিটিজেন্স ফর হিউমিনিটি যৌথ আয়োজনে প্রত্যেককে একটি করে গাছের চারা বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), গ্রিন ইকো এবং রিভারাইন পিপল ক্লাব, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শাখার যৌথ আয়োজনে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কাগজের তৈরি কলম বিতরণ করা হয়।
গাছের চারা ও কলম বিতরণের পূর্বে শিক্ষার্থীদের সামনে প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষায় আলোচকগণ আলোচনা করেন। আলোচনায় গ্রিন ইকোর পরিচালক সঞ্জয় চৌধুরী বলেন- “বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশ জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাবের হুমকিতে আছে। প্রকৃতি ও পরিবেশকে সুরক্ষিত রাখতে না পারলে টেকসই উন্নয়ন কোন ভাবেই সম্ভব নয়। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে আরো বেশি সচেতন হতে হবে”।
বেলা, রাজশাহী কার্যালয়ের সনম্বয়কারী তন্ময় সান্যাল স্কুলের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য, অর্থনীতি ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে প্লাস্টিক দূষণ। ইতোমধ্যেই পৃথিবীর মাটি, পানি, বায়ুমন্ডল, বন্যপ্রাণী, জীববৈচিত্র্য ও মানব স্বাস্থ্যে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এই প্লাস্টিক দূষণ। একবার ব্যবহার্য পলিথিন/প্লাস্টিকপণ্য পরিবেশ দূষণে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে। তাই আমাদের প্লাস্টিকের বিকল্প খুঁজতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মক সচেতন করতে হবে।”
পাঙ্গা রাণী লক্ষ্মীপ্রিয়া স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রোবাইত হাসনাত সোহান গাছ কলম এবং গাছের চারা পেয়ে ভীষণ খুশি। রোবাইত হাসনাত সোহান বলেন, পরিবেশের সুরক্ষার মাধ্যমে আমরা আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।
একই শ্রেনীর শিক্ষার্থী দৃষ্টি মোহন্ত বলেন, এরকম অনুষ্ঠান প্রথম হলো আমাদের স্কুলে। আমি ভীষণ অনুপ্রাণীত হলাম। আমি নিজেও এখন থেকে প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষায় কাজ করবো।
পাঙ্গা রাণী লক্ষ্মীপ্রিয়া স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক তুহিন পাটয়ারি বলেন, আমরা কাঁঠাল গাছের চারা এবং কাগজের কলম পেয়ে আমরা ভীষন আনন্দিত। আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ লক্ষ রাখবো গাছগুলোর প্রতি।
পাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সাধনা রাণী রায় বলেন, আমদের শিক্ষার্থীরা গাছ এবং কলম পেয়ে খুবই খুশি। এরকম আযোজন আমাদের স্কুলে এর আগে হয়নি। আমরা অনুপ্রাণীত। আয়োজক সংগঠন সমূহকে বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই।
এসময় অন্যন্যদের মধ্যে রিভারাইন পিপল ক্লাব, বেরোবি শাখার আহবায়ক ছাওমুন পাটোয়ারী সুপ্ত, গ্রিন ইকোর সদস্য মিথুন চৌধুরী, নিবাস রায়, নুরনবী সরকার সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আয়োজক সংগঠনের মাধ্যমে জানা যায়, পর্যয়ক্রমে কুড়িগ্রাম জেলার অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও পরিচালিত করা হবে।