নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নামে বানানো জাল সার্টিফিকেট সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট একেএম শামসুজ্জামানের কাছ থেকে যারা কিনেছিলেন তাদের নামের তালিকা পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এই তালিকা তারা শিক্ষা বোর্ডের কাছে পাঠাবেন এবং যারা এসব জাল সার্টিফিকেট কিনেছেন তাদের সেগুলো বাতিলে ব্যবস্থা নেবে ডিবি।
শনিবার (১১ মে) দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
হারুন বলেন, শামসুজ্জামান রিমান্ডে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করা সনদ বাতিলের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। যার মাধ্যমে সনদ শনাক্ত করে বাতিল করা যাবে। তাই আমরা এই তথ্য কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সচিব ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানাবো। পাশাপাশি বুয়েটের এক্সপার্টদের যুক্ত করে এই কাজটি কীভাবে করা যায় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হারুন বলেন, শামসুজ্জামান মনে করেছেন, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের চারপাশে দালাল প্রকৃতির লোকজন থাকে, পাশাপাশি সাংবাদিক ও দুর্নীতি দমন কমিশনের লোকজন পাশে থাকলে সনদ বাণিজ্যটা বড় আকারে করা যাবে। সে কারণেই তিনি এই নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন। ফলে সহযোগী ফয়সালকে নিয়ে একটি আলাদা বাসায় বসে সনদ তৈরি করতেন। যার কারণে বিভিন্ন মানুষ তার সঙ্গে যোগাযোগ করত। এই অনিয়মের সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ডিবিপ্রধান।
জাল সনদের ক্রেতাদের বেশির ভাগই প্রতিষ্ঠানপ্রধান!
টাকায় কারিগরি বোর্ডের সনদ বিক্রি করা সেই প্রকৌশলী বরখাস্ত
হারুন বলেন, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট একেএম শামসুজ্জামানসহ বোর্ডের অন্যান্য কর্মকর্তারা বছরের পর বছর টাকার বিনিময়ে যে সনদ ও মার্কশিট বিক্রি করেছেন, বিক্রি করা সনদগুলো কীভাবে শনাক্ত করা যায় সেই তথ্য শামসুজ্জামান আমাদের দিয়েছেন। আমরা সেই তথ্য বোর্ডের কাছে দেব। তারা সেগুলো বাতিলে ব্যবস্থা নেবে।
ডিবি প্রধান বলেন, সিস্টেম এনালিস্টকে দ্বিতীয়বার রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, কোন সাংবাদিক কখন, কীভাবে, কত টাকা দিয়েছেন, আমাদের ডিবির কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরতদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কোনো সংবাদিক শামসুজ্জামানের মুখোমুখি বসে কথা বলতে চাইলে আমরা তাকে সেই সুযোগ দেব। অন্যায়ভাবে কেউ হয়রানির শিকার হোক সেটা আমরা চাই না। পাশাপাশি দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারাও তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আমরা তাদেরকেও বলেছি, দুদক সম্পর্কে শামসুজ্জামান যে তথ্য দিয়েছে, চাইলে আপনারাও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন। যাদের নাম বলেছে সবাইকে কথা বলার সুযোগ দেব।