স্টাফ রিপোর্টার :
চটকদারি সাইনবোর্ড ও মন মাতানো সাজে অফিস সাজিয়ে রাজধানীতে অলি গলি জুড়ে দাঁড়িয়ে আছে ট্রাভেল এজেন্সির নামে বেকার যুবকদের সর্বস্বান্ত করার এক মরণ ফাদ।
এরকমই এক ট্রাভেল এজেন্সির নামে মরণ ফাদের সন্ধান মিলে রাজধানীর বনানী বাজার এলাকার ৫৮ কামাল আতার্তুক এভিনিউ এর দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত সনি ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলস।
যেখানে রয়েছে সু সজ্জিত আধুনিক ডেকোরেশনের অফিস রয়েছে একাধিক কেবিন রুম ও বড় সড় আকারে রিসিপশন রুম। অফিসে প্রবেশ করা মাত্রই মনে হবে আপনি স্বর্গের সিঁড়িতে পা দিয়েছেন। আপনি যেন স্বপ্নের শহর সিঙ্গাপুর সৌদি মালয়েশিয়ায় পৌঁছে গেছেন আসলে না আপনি আপনার কষ্টে অর্জিত সব টাকা অথবা আপনার মায়ের বোনের সকল গহনার সাথে মাথা গোজার ঠাই সামান্য ভিটে মাটি টুকু হারাতে বসেছেন।
চটকধারী বিজ্ঞাপন অথবা লোক মারফত আপনাকে কোন রকম অফিসে নিয়ে আসা তাদের প্রতারণার প্রথম ধাপ। এরপর শুরু হয় গ্রাম থেকে উঠে আসা সহজ সরল বেকার যুবকদের ব্রেন ওয়াশ। বিদেশে ভালো কাজে পছন্দনীয় বেতনে চাকরির কথা বলে মনে একটা আশার প্রদীপ জ্বালানোর প্রস্তুতি গরিয়ে দেয় তারা।
শুরু হয় প্রাথমিক কার্যক্রম পাসপোর্ট তৈরি করা। যাহারা পাসপোর্ট এর বিষয়ে অবগত তাহারা অতি সহজেই করে ফেলেন কারো সহযোগিতা ছাড়াই আর অবগত না হলে খুব সহজেই পাসপোর্ট তৈরি করে দেওয়ার কথা বলে বারতি খরচ সহ নেয় দশ থেকে বারো হাজার টাকা।
তারপর পরপরই শুরু হয় ভিসার প্রসেসিং এক এক দেশে এক এক রকমের খরচ, প্রথমেই ভিসার কথা বলে নিয়ে নেয় খরচের টাকা, গ্রামের সহজ সরল মানুষগুলো তাহার আত্মীয় স্বজন পরিবার পরিজন নিয়ে সামান্য একটু সুখের আশায় নিজের জমানো টাকা অথবা ভিটেমাটি সব বন্ধক বা বিক্রি করে তুলে দেয় ঐসব মানুষরূপী প্রতারকদের হাতে। টাকা পাওয়ার পরপরই শুরু হয় বিভিন্ন রকমের তালবাহানা আজ হবে কাল হবে করে পার করে দেয় দু চার মাস ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে হচ্ছে হচ্ছে বলে পার করে নেয় আরো কয়েক মাস।
এদের মধ্যে কারো কারো পরিচিতজন ঢাকাতে থাকলেও তাদের কাছে আশ্রয় নিয়ে অফিসে খবর নেওয়ার মতো থাকার অবস্থা হয়ে ওঠে না। তাই হয়তো প্রতিনিয়ত তারা অফিসে গিয়ে খোঁজ নিতে ব্যর্থ হয়। কোন ভুক্তভোগী যদি কোনক্রমে অফিস পর্যন্ত পৌঁছেও যায় অথবা টাকা ফেরত চাই তাহলে তাদের হতে হয় লাঞ্ছিত ও অপমানিত। কোন কোন সময় আবার হতে হয় মারধর ও জীবন নাশের হুমকির শিকার। কারণ এ সকল প্রতারক চক্রের থাকে নিজস্ব কিছু কেডার বাহিনী, যারা ভুক্তভোগীকে শারীরিক নির্যাতন ও জীবননাশের হুমকি দিয়ে অফিস হতে বিতাড়িত করে দেয় সবকিছু হারিয়ে কেউ কেউ বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ, অথবা রিক্সা ভ্যান দিন মজুরের কাজ করে জীবন যাপন করে।
সনি ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলস এজেন্সির বিষয়ে বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারা তথ্যের ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে এমনই এক ভুক্তভোগির সাথে কথা হয় আমাদের প্রতিনিধির, ভুক্তভোগীর নাম মোঃ শেখ জালাল, পিতা মৃত শেখ রহম আলী, সং - তন্ত্র খোলা, পোঃ বংখুরী, থানা- হরিরামপুর, জেলা মানিকগঞ্জ এর সাথে। তিনি জানান, চলতি সাল ২০২৪ এর জানুয়ারির প্রথম দিকে পরিচয় হয়, ৫৮ কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ বনানী বাজার ট্রাভেলস এর শফিকুল ইসলাম শফিক এর সাথে।
তিনি শেখ জালালকে সৌদি আরবে পাঠানোর কথা বলে অফিসে নিয়ে গিয়ে সৌদি ভিসা প্রসেসিং করে দিবে বলে প্রথমে নগদ দুই লক্ষ টাকা নেয় কিছুদিন গত হবার পরে আরো টাকা চাইলে সে সম্পূর্ণ টাকা একসাথে দিবে বলে জানান এর পরেই শুরু হয় বিভিন্ন রকমের তালবাহানা। আর নয় তো কাল করতে করতে পার করে দেয় সময়।
ভুক্তভোগী শেখ জালাল ভিসা দেওয়ার বিষয় বাদ দিয়ে টাকা ফেরত চাইলে শুরু হয় নানা রকম অজুহাত শুরু হয় বিভিন্ন রকমের হুমকি ধামকি ও এমনকি তাদের পোষা ক্যাডার বাহিনী দিয়ে চর থাপ্পড় সহ জীবন নাশের হুমকি ও দেওয়া হয়।
আমাদের প্রতিনিধিকে এসব কথা জানালে প্রতিনিধি ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সনি ইন্টারন্যাশনাল এর পরিচালক জনাব সাত্তার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি টাকা পয়সা লেনদেনের কথা স্বীকার করেন কিন্তু গলা ধাক্কা চর থাপ্পড় ও হুমকির কথা অস্বীকার করেন।
আমাদের প্রতিনিধির সামনেই পরিচালক ছাত্তার প্রতারক শফিকুল ইসলাম শফিক এর মুঠো ফোনে টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে কবে দিবে জানতে চাইলে এক সপ্তাহের মধ্যেই দিয়ে দিবে বলে ফোন কেটে দেয় পরিচালক ছাত্তার নিজের বিষয়টি দেখবেন বলে আমাদের প্রতিনিধিও ভুক্তভোগী শেখ জালালকে জানান। কিন্তু আজও ভুক্তভোগী শেখ জালাল কোনো রকমের স্বস্তির আশ্বাস পেল না প্রতারক শফিক এর সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ না করে কেটে দেন জালালের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাছে দাবি সনি ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলসের প্রতারক শফিকুল ইসলাম শফিক এর বিরুদ্ধে আইনানুপ ব্যবস্থা আছে সহ অত্র প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হোক যাতে করে গ্রামের সহজ সরল মানুষ এরকম প্রতারকের হাত হতে রক্ষা পায়।
প্রকাশকঃ ফারজানা , সম্পাদকঃ আলমগীর মন্ডল, যোগাযোগ : ০১৭১১২৯০৯৬১